সোমবার, মার্চ ২৪, ২০২৫

আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস,তরুণদের মধ্যে বাড়ছে ডায়াবেটিসের হার

সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:

আজ মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে কিছু লেখা। প্রাক-ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ডায়াবেটিসের চেয়ে বেশি। শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ জানেই না তারা প্রাক-ডায়াবেটিস অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। রক্তে চিনির মাত্রা যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, কিন্তু ডায়াবেটিস নির্ণয়ের নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম থাকে, সে অবস্থাকে বলে প্রি-ডায়াবেটিস বা প্রাক-ডায়াবেটিস। এটি ডায়াবেটিস নয় কিন্তু ডায়াবেটিসের ঘণ্টাধ্বনি।

কখন প্রি-ডায়াবেটিস:

অভুক্ত অবস্থায় সকালে যদি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৬.১-৬.৯ মিলি মোল/ লিটার এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর যদি ৭.৮-১১ হয়, তবে বলা হবে প্রাক-ডায়াবেটিস। তিন মাস সময়কালব্যাপী গ্লুকোজের গড় মাত্রা নির্ণয়ের একটা মাপকাঠি হাল জামানায় ব্যবহার করা হয়। এটি হলো এইচবি এ-১ সি। এর মাত্রা ৬-৬.৪% হলেও বলা যাবে প্রাক-ডায়াবেটিস।

লক্ষণ:

এটির তেমন কোনো লক্ষণ নেই। তবে শরীরে অনেক জায়গায় কালো হয়ে যাওয়া নির্দেশ করে প্রাক-ডায়াবেটিস। ঘাড়ের পেছন দিকে, বগলের নিচে এবং ক্ষেত্র বিশেষে কুঁচকিতে কালো আস্তর পড়ে যায়। এটাকে বলে একান্থোসিস নিগ্রিক্যান্স। অনেক স্থূলকায় পুরুষ ও রমণীদের ঘাড়ে এমন লক্ষণ প্রকাশ পায়।

প্রি-ডায়াবেটিস থেকে ডায়াবেটিস:

কখন বুঝবেন আপনি প্রাক-ডায়াবেটিস থেকে ডায়াবেটিসের সড়কে? যখন নিচের লক্ষণ গুলো প্রকাশিত হবে:

  • অত্যধিক তৃষ্ণা
  • বহুমূত্র
  • ক্ষুধা বৃদ্ধি
  • দুর্বলতা
  • ঝাপসা দৃষ্টি
  • হাত-পায়ে ঝিনঝিন অনুভব
  • বারবার প্রদাহ বা ইনফেকশন
  • ক্ষত শুকাতে সময় লাগা
  • ওজন হ্রাস

সমস্যা কোথায়:

প্রাক-ডায়াবেটিস একদিকে যেমন ডায়াবেটিসের ঘণ্টা ধ্বনি বাজাতে শুরু করে, পাশাপাশি এটি কিন্তু হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী ও কিডনির ক্ষতি করার অশনি সংকেত প্রদান করে।

প্রাক-ডায়াবেটিস অবস্থায় রক্তে যে চিনির মাত্রা থাকে তা আপনার হৃদরোগ এবং কিডনির রোগ তৈরি করার জন্য যথেষ্ট। বরং বলা যায় বড় বড় রক্তনালীর অসুখ এ অবস্থায় বেশি দানা বাঁধে, যেমন- স্ট্রোক, করোনারি সংক্রান্ত হৃদরোগ ইত্যাদি।

প্রাক-ডায়াবেটিস হলে করণীয়:

তবে আশার কথা হলো প্রাক-ডায়াবেটিস পর্যায়ে প্রতিরোধ জোরদার করলে ডায়াবেটিস থেকে এমনকি আজীবনের জন্য নিজেকে মুক্ত রাখা যায়। সেজন্য করণীয় হলো: ওজনকে বাগে রাখতে হবে। শতকরা পাঁচ থেকে সাত ভাগ শরীরের ওজন কমানোর পাশাপাশি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে জোর কদমে হাঁটলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যাবে শতকরা ষাট ভাগ। সুতরাং মনোযোগী হতে হবে মেদ-ভুঁড়ি ঝেঁটিয়ে বিদায় করার দিকে। পেটের মেদ সবচেয়ে ক্ষতিকর। এটাকে বলা হয় ভিসেরাল ফ্যাট। ইনসুলিনের কার্যকারিতা ভোঁতা করে দেওয়ার জন্য ভিসেরাল ফ্যাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারের মেনু পাল্টে ফেলুন। খাবারের থালা পূর্ণ হোক হরেক রকম সবজি, সালাদ আর ফলমূলে। সরল শর্করা জাতীয় খাবার কমিয়ে দিন, স্থান দিন ফাইবার সমৃদ্ধ জটিল শর্করা। সঙ্গে থাকুক আমিষ, অল্পস্বল্প অসম্পৃক্ত চর্বি। ধূমপানকে আল বিদায় বলুন। কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমিয়ে ফুরফুরে হয়ে উঠুন। নিদ্রা হোক সুখময়। প্রাক ডায়াবেটিস চলে যাবে।

লেখক: মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ এবং আলরাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর

error: Content is protected !!