শনিবার, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫

আদালতের আদেশের পরেও বৃদ্ধা মায়ের ঘর ভাঙলেন দুই ছেলে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের রামুতে আপন মা ও বোনকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘর ভাঙচুর, মারধর ও লুটপাট করেছে আপন দুই ছেলে। রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দারিয়ারদিঘীর দক্ষিণ পাড়া এলাকায় আজ শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত দুই ছেলে হলেন, শফি আলম(৩০) ও শাহ আলম(৩৫)।

মারধরের শিকার বৃদ্ধা আজু মেহের(৭৫) বলেন, গত কয়েকমাস ধরের আমি আর আমার এক মেয়ে মিলে সরকারি একটি খাস জমিতে বাস করছি। আমার দুই ছেলে এই জমি দখলের জন্য এর আগেও কয়েক দফায় আমার আর মেয়ের উপর হামলা চালায়। ঘর ভাঙচুর করে, ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি নিরূপায়।

মা ও বোনের উপর হামলা ও জমি দখলের বিষয়ে এলাকার মোক্তার আহমদসহ কয়েকজন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মাহবুবুর রহমানকে জানান এবং তিনি বিনামূল্যে এই মামলা লড়ার জন্য এগিয়ে আসেন। তিনি রামু সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বৃদ্ধা মা আজু মেহেরের পক্ষে পারিবারিক সহিংসতা আইনে মামলা করলে রামু সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো: আসিফ এর আদালত যুগান্তকারী এক আদেশ দেন।

আদালতের আদেশনামায় দেখা যায়, বৃদ্ধা মা আজু মেহেরকে তার ঘরে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে পুনবর্হালের নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি রামু থানা পুলিশ যাতে বৃদ্ধাকে নিরাপত্তা দেন সে নির্দেশও দেন আদালত। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর পরই রামু থানা পুলিশ গতকাল বৃদ্ধা আজু মেহেরকে ঘরে পুনবর্হাল করেন।

গত ৩০ মার্চ হামলার পর ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকালে আবারো বৃ্দ্ধার ঘর ভাঙচুর ও হামলা চালায় দুই ছেলে শফি ও শাহ আলম। ঘটনা জানার পর এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান শফি ও শাহ আলম।

হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক হিমেল রায় জানান, আমরা আদালতের আদেশ পাওয়ার পর পরই বৃদ্ধা আজু মেহেরকে তার ঘরে পুনবর্হাল করে গিয়েছিলাম। আজ সকালে আবারো হামলা চালায় তার দুই ছেলে। ঘটনাস্থলে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি অত্যান্ত স্পর্ষকাতর। আমাদের সমাজ এখনো অতটা অধঃপতন হয়নি। বৃদ্ধার পক্ষে আমরা আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি। বৃদ্ধার পক্ষে তাকে নিজ বাড়িতে পুনবর্হালের আদেশ হলেও আসামীরা বারবার বৃদ্ধার উপর হামলা ও ঘরবাড়ি দখলের চালাচ্ছে।

এদিয়ে এই ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকার বাসিন্দা মোক্তার আহমদ বলেন, বৃদ্ধা আজু মেহের সর্বহারা। তার পক্ষে আমরা আদালতে গিয়েছি। আদালত বৃদ্ধার পক্ষে রায় দেওয়ার পরেও এবং রামু থানা পুলিশ কয়েকবার এসে আসামীদের বুঝানোর পরেও তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে।

২৮ এপ্রিল শুক্রবার ঘটনাস্থল সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বাইরে বসে বিলাপ ধরে কাঁদছে বৃদ্ধা আজু মেহের ও তার মেয়ে খালেদা বেগম।

ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শফি ও শাহ আলমের ঘরে গেলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি । পাশাপাশি মুঠোফোনে একাধিকার যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি।

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর

error: Content is protected !!