সিসিএন প্রতিবেদন:
কক্সবাজারের টেকনাফ হোয়াইক্ষ্যং এলাকায় আম গাছে আগুনের তাপ লাগায় রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গোলাম আকবর (৪০) নামে এক দিনমজুরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সড়কে নিহত ব্যক্তির লাশ রেখে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
নিহত গোলাম আকবর লালু টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লম্বাবিল তেচ্ছিব্রিজ এলাকার নুর আহমেদ নুরুর ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নিহত গোলাম আকবরের স্ত্রী বসতভিটা পরিষ্কার করে মলয়ায় আগুন দেন। আগুনে পার্শ্ববর্তী ঘরের নজির আহমেদের আম গাছে আগুনের তাপ লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নজির আহমদ গোলাম আকবরকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে নুর আহমেদ, সোলতান আহমেদ, আবছার কবির আকাশসহ ৭-৮জনে বেদম মারধর করেন। স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে স্ত্রী মারধরের শিকার হন। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থাতে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে ৫ দিন চিকিৎসাধীন থেকে শুক্রবার সকালে মারা যান।
গোলাম আকবর হত্যার বিচারের দাবিতে তাঁর লাশ সড়কে রেখে প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে শত শত গ্রামবাসী মানববন্ধন করেন। এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লোকজনের হাতে ‘গোলাম আকবর হত্যার বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গোলাম আকবরের লাশ তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ছোট ভাই শাহ আলম বলেন ‘আম গাছে সামান্য তাপ লাগার কারণে আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা বড় লোক,আমরা দিনমজুর মানুষ। এই দেশে আমাদের বিচার পাওয়া কঠিন, তাই বাধ্য হয়ে সড়কে আসলাম। ’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া খোরশেদ আলম বলেন, ‘নির্দয়ভাবে দিনমজুর গোলাম আকবরকে হত্যা করা হয়েছে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আলমগীর বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর অনেক সময় অতিবাহিত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে পুলিশ চাইলে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারত। আসামিরা এখনো ধরা পড়েনি। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার চাই।’
নিহত গোলাম আকবরের ৭ বছরের কন্যা রায়সা মণি বলেন, ‘আমার আব্বা ঘুম থেকে উঠে না কেন? ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না। আব্বাকে ওরা মারছে তাই রাগ করে ঘুমিয়ে আছে মনে হয়। আমার আব্বাকে যারা মারধর করছে তাদের বিচার চাই।’
এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ওসমান গনী বলেন, এখনো আমরা থানায় অভিযোগ পাইনি। তারপর আমরা আসামিদের আটকের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।