সাইদুল ফরহাদঃ
অবৈধ কার্যকলাপ ও পর্যটকদের ব্ল্যাকমেইল করে সর্বস্ব লুটের অভিযোগে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর সাইনবোর্ডহীন ৩টি কটেজ থেকে স্বামী -স্ত্রী সহ২৫ জন নারী-পুরুষকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১মার্চ) গভীর রাতে কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের লাইট হাউজ এলাকার তিনটি কটেজে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী।

আটককৃতরা, কক্সবাজারের মহেশখালী, ঈদগাঁও,সাতকানিয়া, লক্ষীপুরের বাসিন্দা।
শনিবার (২মার্চ) দুপুরে টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।
তিনি জানান,একটি দালাল চক্র বিভিন্ন কৌশলে পর্যটকদের কটেজ জোনের বিভিন্ন রুমে নিয়ে যায়। পরে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত নারীদের দিয়ে ভিডিও করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে সর্বস্ব লুটে নেয়। এসব কাজ বাড়তে বাড়তে এখন অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে কটেজ জোন। সেখানে মাদকের ছড়াছড়িও হয়েছে।
আটক নারীরা বোরকা পরে সমুদ্র সৈকত থেকে পর্যটকদের রুমে নিয়ে যায়।পরে তাদের কাছে থাকা টাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করা করে নেন। আটকদের মধ্যে অনেকেই ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল উঠেন। স্বামী পাহারায় থেকে স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে থাকেন।পরে এসব অপরাধ করে থাকেন।
তবে আটকের মধ্যে কয়েকজন নারী জানান, আমরা প্রেমিক প্রেমিকা নিয়ে ঘুরতে আসি। তবে রুম না পেয়ে কটেজে উঠছি সেটি আমাদের দোষ। বাংলাদেশের আইনে লেখা আছে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েরা চাইলে তারা একান্ত সময় কাটাতে পারবে। কিন্তু এখন তো সেটি পারছি না।
আটকদের মধ্যে নূর জাহান নামক একজন বলেন, আমরা স্বামী স্ত্রী হোটেল উঠেছি। আমাদের কাবিন নামাও আছে। তারপরও আমাদের আটক করা হয়। এখন আমাদের ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হবে। আমরা কীভাবে নিজেদের চেহারা সমাজে দেখাবো। আপনারা করেন বিচার।
টুরিস্ট পুলিশের এসব অভিযানের কারণে পর্যটক শিল্প প্রভাব পড়বে বলে সমালোচনা করেন সচেতন মহল।
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই সমুদ্র সৈকত ছাড়া কক্সবাজারে বিনোদনের বাড়তি আর কোন সুযোগ সুবিধা নেই বললে চলে। তারমধ্যে যুক্ত হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা, সবমিলিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ধ্বংসের পথে। নেই কোন পর্যটক বান্ধব কোন সরকারি বেসরকারি সংস্থা। যে যার মতো করে পর্যটন শিল্পের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্যস্ত এভাবে একটি পর্যটন শহর চলতে পারেনা।কথায় কথায় হোটেল মোটেল কটেজ জোনে পতিতা আটকের নামে অভিযান চালিয়ে পর্যটন শিল্পে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
কোন ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া অনেক সময় স্বামী স্ত্রীসহ আটক করে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে যা দুঃখজনক। মূলত এসব অভিযানে শৃঙ্খলা ফিরে না মাসিক মাসোহারা বাড়ে কেবল।