সাইদুল ফরহাদ:
পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজার। সমুদ্র নগরী মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। সমুদ্রে পাড়ের মানুষ এবার ট্রেন পেতে চলেছে এই অঞ্চলের মানুষ।
আর তাদের স্বপ্ন পূরণে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়ায় ঝিনুক আকৃতির আইকনিক স্টেশনের পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধানের হাত দিয়ে শুরু হবে সেই স্বপ্নযাত্রা।
শনিবার (১১নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে কক্সবাজার রেলস্টেশনে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মঞ্চে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তিনি কক্সবাজার দোলহাজারী রেল প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর অতিথিদের নিয়ে আইকনিক রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটবেন এবং পতাকা উড়াবেন ও হুইসেল বাজাবেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে চড়ে রামু পর্যন্ত ভ্রমণ করবেন সেখানে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর রামু থেকে হেলিকপ্টার যোগে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন এবং ১ম টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাতারবাড়ি টাউনশিপ মাঠে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন এবং মাতারবাড়ি ১২শ’ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন,কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে ঢাকাসহ গোটা বাংলাদেশের সঙ্গে কক্সবাজারের রেল যোগাযোগের শুরু হবে।
তবে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। শুরুতে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া একটি মেইল ট্রেন দোহাজারী পর্যন্ত চলাচল করলেও সেটাকে পরবর্তীতে কক্সবাজার পর্যন্ত আনা হবে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকার ২০ টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। যার মধ্যে রেলসহ ১৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪ টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সে লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।
এদিকে জনসভাস্থলে নির্মাণ করা হয়েছে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের নৌকার আদলে মঞ্চ, যেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভা পরিণত হবে জনসমুদ্রে এমনই বলছেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। সমাবেশস্থলে সামিয়ানার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় এবং খাবার পানির ব্যবস্থা ও ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে সেখানে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার আসেন। আর প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রয়াসে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ৯৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বদলে যাচ্ছে কক্সবাজার।