সিসিএন প্রতিবেদকঃ
ফাহিম তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। ২০২১ সালে রামুর খিজারী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেছেন তিনি। মাঝখানে এক বছর পড়েননি। কক্সবাজার সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন তিনি। পড়াশোনার সুবাদে কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ার ছড়া এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি পাঠাও কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করতেন তিনি।
গত ২৬ জুলাই কাজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি।
শিক্ষক মা-বাবার সন্তান লাবিবও এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসেবে বেশ পরিচিত। ২০২১ সালে কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি কক্সবাজার সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
পড়াশোনা নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে লাবিবের প্রায়ই ঝগড়া হতো। অনেক সময় বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন লাবিব। নিখোঁজের পর ছেলে পরীক্ষার আগে ঘরে ফিরবেন- এমন আশায় বুক বেঁধেছিলেন মা।
লাবিবের বাবা স্কুলশিক্ষক এনামুল হক বলেন, ‘২৬ জুলাই আমরা দুজনই স্কুলে ছিলাম। সকালে বের হওয়ার সময় কথাও বলেছি ছেলের সঙ্গে। কলেজে যাবে বলে ব্যাগ নিয়েছিল। কিন্তু আর ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। জিডি নিজে হাতে লিখছি থানায় যাব বলে। কিন্তু তার মায়ের দাবি ছিল পরীক্ষার আগে হয়তো ফিরবে। তাই থানায় যাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছেলের অপরাধের দায় আমরা কখনো নেব না। জামিনও চাইতে যাব না।’
কক্সবাজার সরকারি কলেজ ও কক্সবাজার সিটি কলেজে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের পরিবারের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে কারা কারা সম্পৃক্ত, সেসব ব্যক্তির ব্যাপারও নজরদারির কথা বলছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ আমরা জানতে পারি রামু থানার দুজন শিক্ষার্থী জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা। তার পর থেকে তাদের এলাকাগুলোতে তৎপরতা শুরু করেছে। যেখানে তাদের চলাচল বেশি ছিল, সেসব এলাকায় পুলিশ তৎপরতা চলছে। পাশাপাশি তাদের দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও নজরদারি করা হবে। যদিও পুলিশের রুটিনেও এটি ছিল।’
‘ইমাম মাহদীর কাফেলা’ নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য সন্দেহে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার নির্জন এলাকা থেকে ১৭ জনকে আটক করে ‘কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ (সিটিটিসি)। তাদের মধ্যে দুজন ফাহিম ও লাবিব।
এ সময় জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, কমান্ডো বুটসহ প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি, ছুরি-রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।