সিসিএন ডেস্ক:
বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (২৬ জুন) ভোরে বগুড়া শহরের চেলোপাড়া চাষিবাজারের মাছের আড়ত এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদি হলেন- কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম ওরফে মজনু (কয়েদি নম্বর-৯৯৮), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন (কয়েদি নম্বর-৫১০৫), বগুড়ার কাহালু পৌরসভার মেয়র আবদুল মান্নানের ছেলে মো. জাকারিয়া (কয়েদি নম্বর-৩৬৮৫) এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ (কয়েদি নম্বর-৪২৫২)।
পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে তারা কনডেম সেলের ছাদ কেটে কাপড়ের রশি বানিয়ে ছাদ থেকে নেমে পালিয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জেলখানার অদূরে একটি বাজার থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। জেল কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি জানায় ৩টা ৫৬ মিনিটে। এরপর পুলিশের সব ফাঁড়ি এবং টহল দলকে অ্যালার্ট করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪টায় সদর ফাঁড়ির সব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পলাতক চার আসামিকে ধরে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে জেল কর্তৃপক্ষ আবার মামলা করবে। এরপর তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে কারাগার থেকে আসামি পালানোর ঘটনায় সকালে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, ডিআইজি প্রিজনসহ একাধিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, বগুড়া কারাগার অনেক পুরাতন। এটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে ভবনের অনেক স্থান নাজুক। ওই চার আসামিকে এ বছরের ১ জুন এখানে নিয়ে আসা হয়। তাদের রাখা হয়েছিল একই সেলে। তারা আসার পর আমি পরিদর্শনেও গিয়েছিলাম। আজকে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ওরা ছাদের যে অংশে ফুটো করেছে সেখানে কোনো রড ছিল না। তারা ছাদে গামছা বেঁধে ছাদ ফুটো করে। আমরা এসব স্থান সংস্কারের কথা বলেছি। এছাড়া যেদিক দিয়ে তারা পালিয়েছিল সেখানে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। পাশাপাশি কমিটিতে জেলা পুলিশ, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও জেলা কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা এবং নিরাপত্তাব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। তবে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডিসি সাইফুল ইসলাম।
তিনি জানান, প্রতিবেদনটি ডিআইজি প্রিজনকে দেয়া হবে। তার ওপর ভিত্তি করে কারাগার কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।