সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:
নুর অভিযোগ করেন, এত রাতে দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন ডিবি সদস্যরা। এ সময় তারা বাসার সিসিটিভির হার্ডডিস্ক ও ক্যামেরাসহ লাইভে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে বলে জানান নুর।
মধ্যরাতে ‘দরজা ভেঙে’ গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের বাসা থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় তার বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ডিবি সদস্যরা। পরিচয়ে তারা বলেন, মতিঝিল জোনের ডিবি সদস্য তারা।
এসময় ডিবি সদস্যরা সেখানে থাকা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইয়ামিনকে আটক করে নিয়ে যান।
নুর অভিযোগ করেন, এত রাতে দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন ডিবি সদস্যরা। এ সময় তারা বাসার সিসিটিভির হার্ডডিস্ক ও ক্যামেরাসহ লাইভে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে বলে জানান নুর।
এর আগে রাত আড়াইটার কিছু সময় পর নুর তার ফেসবুক পেজে কয়েক দফা লাইভ করেন। এসময় দেখা যায় সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক নুরের বাসায় ঢোকার চেষ্টা করছে, পরে অভিযানের বিষয়টি জানালে নুরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।
ফেসবুক লাইভে এসে নুর এত রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো বাসায় ঢুকতে পারেন কিনা- সে ব্যাপারে প্রশ্ন রাখেন। বলেন, ‘এখন রাত আড়াইটা বাজে। আমার ছোট বাচ্চা আছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আজ হজ থেকে ফিরেছেন। এত রাতে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কাজ আমার বাসায় থাকতে পারে বলে আমি মনে করি না। তারা কেন এখানে আসছে আমি জানি না।’
লাইভে নুর আরও বলেন, ‘ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্তৃক আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার বাবাকে তুলে নেওয়া হয়েছে বাসা থেকে। পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানকে তুলে নিয়েছে। আরও কয়েকজন ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
নুরের ভাষ্য, ‘মূলত এই ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের পতন ঠেকাতে বিরোধী দলের ওপর গ্রেপ্তার-হামলা-মামলার পথ তারা বেছে নিয়েছে।’
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খানও বলেন, ‘এর আগে গতকাল ইয়ামিনকে ধরতে তার বাবাকেও তুলে নিয়ে যায় ডিবি। ইয়ামিন এখন মিন্টু রোডে ডিবি হেফাজতে আছে।’
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিন ইয়ামিন মোল্লার বিরুদ্ধে গত ২১ জুলাই একটি ভাঙচুরের মামলা হয়েছে পল্টন থানায়। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ইয়ামিনের বাবাকে তুলে আনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিন ইয়ামিনকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা করার জন্যই তার বাবাকে আনা হয়েছিল।’
ভাঙচুরের মামলার এমন একজন আসামিকে মধ্যরাতে কারও বাসার দরজা ভেঙে তুলে আনা যায় কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে এই ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘ধরুন আপনার বাসায় একটা চুরি হয়েছে। সেই চোর একটা বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। আমি খোঁজ পেলাম ভোর ৪টার সময় সেখানে গেলে তাকে পাওয়া যাবে। তাহলে আমি কি সেখানে ৭টায় যাব? আমি তো ৪টাতেই যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোর ৪টায় গিয়ে সে যদি গ্রেপ্তারে বাধা প্রদান করে তাহলে তাকে জোরপূর্বক কিংবা সেই বাধা উপেক্ষা করেই তাকে অ্যারেস্ট করতে হবে। এটা আইনেই আছে।’