নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বনবিভাগের জমিতে রাতারাতি গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ গরুর হাট! ৩০ নভেম্বর আকস্মিক উপজেলার কৈয়ারবিল ইসলাম নগর এলাকায় এই অবৈধ গরুর হাটটি বসানো হয়েছে। সে হাটের দোহাই দিয়ে কক্সবাজারের অন্যান্য হাট থেকে ক্রয় করে গরু ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে নেয়ার পথে চকরিয়ার এই অবৈধ গরুর হাটের চাঁদা আদায় করছ বলে অভিযোগ রয়েছে।
অবৈধভাবে এই গরুর হাট বসানোর কারণে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে কোটি কোটি টাকায় ইজারা নেয়া অন্যান্য গরুর হাটগুলোর ইজারাদাররা পড়েছে চরম লোকসানের মুখে! এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবৈধ গরুর হাট উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রামু চাকমারকুল পশুর হাটের ইজারাদার কেএম রহীম উদ্দীন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, দেশের পটপরিবর্তনের পর থেকে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইসলাম নগর এলাকায় গত ৩০ নভেম্বর রাতারাতি স্থায়ী হাট বসায়। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই এই গরুর হাটটি বসায় জনৈক মানিক, ওমর আলী, আজরগর, মুকুল, বাচ্চু, মামুনসহ আরো কয়েকজন। তাদের সাথে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক জড়িত রয়েছে বলে খবর রয়েছে।
এই গরুর হাটে বিক্রি করা হচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম গর্জনিয়ার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা মিয়ানমারের অবৈধ গরু। অন্যদিকে চাকমারকুল, খরুলিয়া, গর্জনিয়া, ঈদগাঁও পশুর হাট থেকে গরু ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়ার পথে গরুর গাড়ি আটকাচ্ছে চকরিয়ার অবৈধ হাটের সাথে জড়িত লোকজন। গাড়ি আটকে তারা গরু প্রতি ১০০০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। না দিলে গাড়ি আটকে রাখা হয়। এর অংশ হিসেবে ২ ডিসেম্বর এক ব্যবসায়ীর চারটি আটকে রাখা হয়।
বনবিভাগ জানিয়েছে, বনের জমিতে বসানো অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ করে করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ মারুফ হোসেন বলেন, অবৈধভাবে বনের জমি দখল করে ওই গরুর হাটটি বসানো হয়েছে। এই হাটটি উচ্ছেদ করার জন্য আমরা কয়েকদিন ধরে টানা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ায় উচ্ছেদ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, গরুর এই বাজার বসানোর ব্যাপারে আমাকে জানিয়েছে। বাজারটি অনেক পুরনো। মধ্যখানে অনেক দিন বন্ধ। সম্প্রতি এটি আবার চালু করা হলো। এখনো জেলা প্রশাসন অনুমোদন দেয়নি। তবে উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমোদন আছে। উপজেলা প্রশাসন খাস কালেকশনও করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, অবৈধ গরুর হাট বসানোর বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। যেহেতু জায়গাটি বনবিভাগের এখতিয়ারে, তাই বনবিভাগেন সুপারিশ মতো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভুঁইয়া বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, যেহেতু জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে, বিষয়টি তদারক করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও বনবিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।