সিসিএন রিপোর্ট :
বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ ছিলেন উখিয়ার পাহাড়খেকোদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। যেখানে পাহাড় কাটা সেখানেই পাহাড় রক্ষার দূত হয়ে দাঁড়াতেন তিনি। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত মাত্র ৪ মাসে অসংখ্য পাহাড় কাটার ড্রেজার ও ডাম্পার আটক করেন তিনি। যার কারণে পাহাড়খেকোদের চক্ষুশূলে পরিণত হন। সব পাহাড়খেকো জোট বেঁধে নামেন বন কর্মকর্তা সাজ্জাদকে হত্যার মিশনে।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৩১ মার্চ রাতে উখিয়ার হরিনমারা এলাকায় পাহাড় কাটার খবর পেয়ে অভিযানে গেলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় তাকে।
সোমবার চট্টগ্রামের সীতাকু- থেকে বন কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামী কামাল উদ্দিনকে আটক করা হয়। একই সময়ে উখিয়ার কোটবাজার থেকে আরেক আসামী হেলালকে আটক করা হয়। র্যাবের দাবী, হত্যকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কামাল।
পাহাড় কাটার মাটি বহনের সময় র্যাবের দাবী, কিছুদিন আগে পাহাড় কাটার মাটি বহনের সময় কামালের একটি পিকআপ জব্দ করেছিল বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ। এছাড়াও সিন্ডিকেটের আরো কয়েকজনের পিকআপ জব্দ করেছিলেন, যার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হরিনমারায় মধ্যরাতে অভিযানে গেলে পিকআপ চাপা দিতে খুন করা হয় সাজ্জাদকে।
র্যাবের দাবী, পিকআপে ড্রাইভার বাপ্পির পাশের সিটে বসেছিলেন কামাল। কামালই বাপ্পিকে নির্দেশ দেয় বন কর্মকর্তাকে পিষ্ট করে খুন করার।
র্যাব বলছে, উখিয়ায় স্থানীয় হেলাল, গফুর ও বাবুলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে। এই চক্রের কাছে প্রায় ১০ থেকে ১২ টি ডাম্পার ও কয়েকটি মাটিকাটার ড্রেজার রয়েছে। তারা রাতের অন্ধকারে বন কর্মকর্তাদের অগোচরে পাহাড়ের মাটি কেটে এনে প্রতি ডাম্পার ৯০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিভিন্ন লোকজনের কাছে জমি ভরাট করার জন্য বিক্রি করে থাকে। বন কর্মকর্তাদের আগমন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে চক্রের লোকদেরকে নিয়োগ করে রাখে তারা।
এর আগে এই ঘটনায় হত্যাকা-ের প্রধান আসামী পিকআপ চালক বাপ্পিকে আটক করে পুলিশ।