মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৪

ছুটিতে ঘুরে যান রামু

রিজন বড়ুয়া, রামু :

ঈদুল আযহা’র ছুটিতে ইতিমধ্যে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে লাখো পর্যটক ভিড় জমিয়েছেন। কক্সবাজার সৈকতের পাশাপাশি মন চাইলে দেখে আসতে পারেন পর্যটকদের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের পসরা সাজিয়ে বসা রামু।

রামুতে রয়েছে কয়েক ডজন দর্শনীয় স্থান। তাঁর মধ্যে হিরাম কক্সের বাংলো ও হিমছড়িতো আছেই। এছাড়া দেশের সর্ববৃহৎ রাবার বাগান, আস্ত জাহাজের আদলে গড়ন স্বপ্নতরী ও সাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো কানা রাজার সুরঙ্গ এ উপজেলার অন্যতম আকর্ষণ। সেইসাথে ঘুরে আসতে পারেন থাই টেম্পলের আদলে গড়ে ওঠা বৌদ্ধ মন্দিরগুলো।

মন্দিরগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, সম্রাট অশোক নির্মিত ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, উত্তর মিঠাছড়ির একশো ফুট সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি, চেরাংঘাটা সড়কে অবস্থিত সাদা চিং ও লাল চিং বৌদ্ধ বিহার, বড় ক্যাং, উখিয়ার ঘোনা পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত প্রাচীন বৌদ্ধ জাদি, লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার, কেন্দ্রীয় সীমা বিহার ও হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার।

হিমছড়ি

হিমছড়ি
কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. দক্ষিণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিমছড়ি। কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়কে একপাশে নীল জলরাশি বেষ্টিত সমুদ্র অন্যপাশে সারি সারি পাহাড়। আকাশ,সমুদ্র,উপকূলে সাম্পানের বিশ্রাম,জলপ্রপাত আপনাকে মুগ্ধ করবে। সেইসাথে পাখির চোখে পাহাড়ের উপর থেকে হিমছড়ির নৈসর্গিক সৌন্দর্য নতুন মাত্রা যোগ করবে।

প্যাগোডা (চাতোপা জাদি)

প্যাগোডা (চাতোপা জাদি)

রামু উপজেলা সদরের ৩ কিলোমিটার দূরে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের জাদিপাড়া এলাকায় প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত জাদিটি। উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থানের কারণে অনেক দূর থেকে এ জাদির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। জাদিটির পাহাড় থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতও দেখা যায়।

রাবার বাগান

রাবার বাগান
রামু উপজেলায় সদর থেকে দুই কিলোমিটার উত্তরে রাবার বাগানের অবস্থান। সবুজের সমারোহে সারি সারি রাবার বাগানের বিশালতা আপনাকে মুগ্ধ করবে। এটি একটি আদর্শ পিকনিক স্পষ্টও বটে।

লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার

লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার
সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে অফিসেরচর এলাকায় লামার পাড়া বিহারের অবস্থান। এটিকে থোয়াইগা চৌধুরীর ক্যাং ও বলা হয়। মূল ক্যাং ঘরটি বার্মাটিক কাঠ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে সজ্জিত। এ ক্যাং – এর পিতলের নির্মিত বৌদ্ধ মূর্তিটি সম্ভবত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উঁচু বৌদ্ধ মূর্তি। এটি নানা ধরনের অলংকার ও আলপনা খচিত পাথরের উপর উপবিষ্ট বিরাট এক বিস্ময়।

রাংকুট বৌদ্ধ মন্দির

রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার

থাই টেম্পলের আদলে গড়ে ওঠা রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার চৌমুহনী স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে রাজারকুল এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় আলো ছড়াচ্ছে ব্যাপক পরিসরে। বিহারটিতে রয়েছে রাংকুট জাদুঘর,প্রজ্ঞাবংশ ফ্লাইওভার,ইকো মেডিটেশন পার্ক,রাংকুট মিরাকেল গার্ডেন। তার পাশাপাশি সম্রাট অশোক, হিউয়েন সাঙ, ড. বি. আর আম্মেদকর এর ভাস্কর্য। মন্দিরটি ২৫০০ বৎসর পূর্বে নির্মিত হয়। জনশ্রুতি আছে এই বিহারকে কেন্দ্র করে এক সময় এই অঞ্চলে বৌদ্ধ শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছিল। এর পাশেই হিন্দুদের রামকোট তীর্থধাম।

১০০ ফুট গৌতম বুদ্ধমূর্তি

১০০ ফুট গৌতম বুদ্ধমূর্তি
রামু চৌমুহনী হতে উত্তরে আড়াই কি.মি দূরে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের পাহাড়ের বুকে মনোরম পরিবেশে গৌতম বুদ্ধের সিংহ শয্যা একশ ফুট মূর্তিটি পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে ব্যাপক পরিসরে।

হিরাম কক্সের বাংলোবাড়ি

হিরাম কক্সের বাংলোবাড়ি
রামু সদর ইউনিয়নের চৌমুহনী স্টেশন থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলেই ইংরেজ ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের বাংলোবাড়ি। এটি ২২০ বছরে পুরোনো। টিনের কক্স সাহেবের বাংলোবাড়ি নিঃসন্দেহে আপনাকে কক্সবাজারের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করাবে। এই হিরাম কক্সের নামেই কক্সবাজার জেলার উৎপত্তি।

স্বপ্নতরী

স্বপ্নতরী
রামু উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে রশিদনগর ইউনিয়নের একটি পাহাড়কে সম্পূর্ণ অক্ষত রেখে প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুটের স্বপ্নতরী নামের আস্ত একটি জাহাজ। জাহাজটি রামুর পর্যটনশিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

কানা রাজার সুরঙ্গ

কানা রাজার সুরঙ্গ
রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা গ্রামে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আঁধার মানিক বা কানা রাজার সুরঙ্গ। যা সাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো। কক্সবাজারের ইতিহাস গ্রন্থ ছাড়াও পাকিস্তান আমলে প্রকাশিত পাকিস্তান পর্যটন ডিপার্টমেন্ট ট্যুরিস্ট গাইডে রামুর এই আঁধারমানিক বা কানা রাজার সুড়ঙ্গের কথা লিপিবদ্ধ ছিল।

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর

error: Content is protected !!