সোমবার, অক্টোবর ২, ২০২৩

জামাল-মার্টিনেজ ইস্যুতে ফুটবলারদের ক্ষোভ

সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:

সোমবার কাকডাকা ভোরে মাত্র ১১ ঘন্টার জন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। এত অল্প সময়ে মার্টিনেজের হয়তো বাংলাদেশ দর্শনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে, কিন্তু অপূর্ণ যে থেকে গেছে ভক্তকুলের একটা বিশাল অংশের। যে তালিকায় আছেন বাংলাদেশের ফুটবল অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে গতকাল দুপুরেই দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। বিমানবন্দরে নেমে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া অপেক্ষায় ছিলেন মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করার। সে সময় কলকাতা যাওয়ার জন্য মার্টিনেজও ছিলেন সেখানে। কিন্তু মার্টিনেজের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা আন্তরিক না হওয়ায় দেখা হয়নি তাদের। বাংলাদেশ জাতীয় দলের টিম অ্যাটেনডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন পুরো ঘটনাটি বলেন এভাবে, ‘অনেকে চলে গেলেও জামাল ভাই অপেক্ষা করছিলেন মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করার। কয়েকজনকে বলেও ছিলাম, বাংলাদেশ দল অপেক্ষা করছে। কিন্তু তার সফরসঙ্গীরা আন্তরিক ছিলেন না। তাই দেখা হয়নি তাদের।’

বাংলাদেশ নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিল আর্জেন্টিনার মার্টিনেজের। ভক্তদের উন্মাদনা দেখতে চেয়েছিলেন মেসির এই সতীর্থ। কিন্তু মার্টিনেজের মানসপটে বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন ভক্তদের যে ছবি আঁকা ছিল, তার স্পর্শ কতটা পেলেন তিনি?

বিমানবন্দর থেকে হোটেল, সেখান থেকে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নেক্সট ভেঞ্চারের অফিস হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়– ঘড়ি দেখে ছোটাছুটিতে কেবল কালো কাচে ঘেরা গাড়িতে এক বিশ্বকাপজয়ীর অস্পষ্ট ছবিই দেখলেন তার ভক্তরা। বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের যে আবেগ দেখে মন দেওয়া-নেওয়া শুরু, সমর্থকদের যে উন্মাদনা দেখে ভালোবাসার সম্পর্ক গাঢ়; সেই সাধারণ সমর্থকদের তৃষ্ণা অপূর্ণই থেকে গেল।

শেষ সময়ে বাংলাদেশ ফুটবল অধিনায়কেরও মন খারাপ হয়ে থাকলো। দীর্ঘ অপেক্ষা করেও মার্টিনেজের দেখা পাননি তিনি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ঝাড়ছেন জামাল ভূঁইয়ার সতীর্থরা।

একটি দেশের অধিনায়কের সঙ্গে এমন আচরণ দেখে ক্ষুব্ধ জাতীয় দলের স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন। নিজের ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘জামাল ভূঁইয়া দেশের ফুটবলের একমাত্র পোস্টার বয়। দেশের টানে উড়ে আসছেন সুদূর ডেনমার্ক থেকে। এসব গল্প দেশের প্রতিটি ফুটবলপ্রেমী মানুষের জানা। শুধু জানলো না প্রোটোকলে থাকা ব্যক্তিরা। শুধু চিনল না নিরাপত্তার দোহাইতে নিজ দেশের ক্যাপ্টেনকে অবমাননা করা মানুষগুলো।’

আবাহনীর অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার আরও জানান, ‘আপনার এমি মার্টিনেজকে চিনে স্বার্থকতা কী, যেখানে নিজ দেশের ক্যাপ্টেনকেই সম্মান জানাতে পারলেন না!’

জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার তকলিস আহমেদের ক্ষোভও কম নয়। তার কথায়, ‘নিজের দেশের ফুটবল অধিনায়ককে সম্মান দিতে পারেন না! আসুন আগে নিজের দেশের ক্যাপ্টেনকে সম্মান করি।’

জাতীয় দলের গোলকিপার শহিদুল আলম সোহেলও ক্ষুব্ধ। তিনি বললেন সেই প্রচলিত কথা, ‘যেই দেশে গুণীজনদের সম্মান করা হয় না, সেই দেশে গুণীজন জন্মায় না!’

বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো বলেন, ‘দেখা হলে কিছু টিপস নিতাম। বাংলাদেশে এলো দেখা হলো না। আর কখনো দেখা হবে কি না তাও জানি না। ফেডারেশনের মাধ্যমে আসলে বা ফেডারেশনে যোগাযোগ করলে হয়তো আমরা ফুটবলাররা সুযোগ পেতাম দেখা করার।’

যদিও জামাল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আসলে এয়ারপোর্টে অনেক লোক ছিল। হয়তো এ কারণে তার সঙ্গে দেখা হলো না। যদি আগে থেকে বলা থাকতো তাহলে হয়তো সম্ভব ছিল। দুর্ভাগ্য যে দেখা হলো না।’

সূত্র: সমকাল

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর