সিসিএন অনলাইন ডেস্কঃ
দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। গতকাল মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে। চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রাও ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। অতিরিক্ত গরমে ‘হিট স্ট্রোক’ করে চট্টগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে বৃদ্ধি পাবে অস্বস্তিও।
বিভাগগুলোর মধ্যে খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও ঢাকায় গরম ছিল বেশি। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে বেশির ভাগ অঞ্চলে গতকালের গড় তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। প্রতিদিন দেশের ৪৪টি এলাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তালিকা প্রকাশ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। পাবনায় ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটি তীব্র তাপপ্রবাহ। সে হিসেবে গতকাল দেশের নয় জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। এ তালিকায় রয়েছে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া।
৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে সেটাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে সেটা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সামান্য বাড়তে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা।
এদিকে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, হিট স্ট্রোকের কারণে তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, গতকাল সকালে ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন (৩৫) জমিতে কাজ করছিলেন। তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল বিকালে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয় মর্জিনা খাতুন নামের এক নারীকে। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাবনা শহরে একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম সুকুমার দাস (৬০)। পাবনা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনুমান করছি, প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোক করে তিনি মারা গেছেন।’
চট্টগ্রামে মৃত্যু হয় আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর পরুয়াপাড়ার ছালেহ আহমেদের (৭০)। তার মৃত্যু হয় আনোয়ারা হলি হেলথে। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, হিট স্ট্রোকের কারণে ছালেহ আহমেদের মৃত্যু হয়েছে।