সিসিএন প্রতিবেদক:
দেশে প্রতি আট জনে একজন বহন করছে রক্তের ভয়াবহ রোগ থ্যালাসেমিয়া। সবচেয়ে বেশি বাহক রয়েছে রংপুর বিভাগে। রোগ নির্মূলে পাঁচ বছর আগে রোডম্যাপ হলেও নেই কোনো অগ্রগতি। প্রতি বছরে গড়ে রোগী বাড়ছে আড়াই হাজার। এ জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরি ও বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে বাহক নির্ণয় বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
এক মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে এখন খাদিজার সংসার। থ্যালাসেমিয়া কেড়ে নিয়েছে মেঝো মেয়ে আমেনাকে। তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। খাদিজা ও তার স্বামী দুজনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক। তাদের তিন সন্তানের সবাই থ্যালাসেমিয়া রোগী। প্রতি মাসে রক্ত সংগ্রহ ও চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন যেন ক্লান্ত পরিবারটি।
থ্যালাসেমিয়া নিয়ে কাজ করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইদেশি। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণায় দেখা যায়, থ্যালাসেমিয়ার বাহক সবচেয়ে বেশি রংপুরে ২৯ ভাগ। এর পর রাজশাহীতে ১৬ ভাগ, ময়মনসিংহে ১৩ ভাগ, সিলেটে ১১ ভাগ, ঢাকায় ৯ ভাগ, চট্টগ্রামে ৯ ভাগ, বরিশালে ৭ ভাগ আর খুলনায় ৪ ভাগ।
স্বাধীনতাপদক জয়ী চিকিৎসাবিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী জানিয়েছেন, ১৮৭৭ জনের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ১২ ভাগ বা ২ কোটি মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। সবচেয়ে বেশি বাহক রংপুর বিভাগে, ২৯ শতাংশ। রাজশাহী ও ময়মনসিংহেও বাহক বেশি। সচেতনতার অভাব এবং আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে বেশি হলে বাহক ও রোগী বাড়ে।
ড. ফেরদৌসী কাদরী আরও জানান, থ্যালাসেমিয়া নির্মূলে ২০১৮ সালে ১০ বছরের রোডম্যাপ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। কোনো অগ্রগতি ছাড়াই কেটে গেছে পাঁচ বছর। দুই বাহকের মধ্যে বিয়ের কারণে প্রতি বছর জন্ম নিচ্ছে নতুন বাহক ও রোগী। তবে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সঠিক সংখ্যা জানে না কেউ।
শরীরে রক্ত উৎপাদন না হওয়ায় থ্যালাসেমিয়া রোগীকে মাসে এক থেকে তিনবার রক্ত নিয়ে বাঁচতে হয়। মাসে খরচ দশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা। চিকিৎসা না নিলে অল্প বয়সেই মৃত্যু হয় রোগীর।