সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:
শিগগিরই প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে একটি বড় সুখবর পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। নতুন আরেকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বাপেক্স। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া বাকি। যা শিগগিরই দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
ভোলার ইলিশা ইউনিয়নে নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পেয়েছে বাপেক্স। জ্বালানি অনুসন্ধানকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সবকিছু আশানুরূপভাবে চললে এই মাসের মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হবে।
এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী একাত্তর টিভিকে জানিয়েছেন, শিগগিরই জাতিকে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কারের সুখবর দেয়া হবে।
ইলিশা-১ কূপ খনন শেষে তিনটি স্তরে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনা দেখছিলে বাপেক্স। গত ২৮ এপ্রিল তারা ওই কূপে প্রথম ডিএসটি পরীক্ষা শুরু করে আগুন প্রজ্বলন করেন। ৫ মে প্রথম পরীক্ষা শেষ হয়। ৬ মে দ্বিতীয় স্তরের দ্বিতীয় ডিএসটি পরীক্ষা শুরু করা হয়। এতে তারা নিশ্চিত হয়েছে, সেখানে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস মজুত রয়েছে।
এই গ্যাস কুপ থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে বলে কারিগরি দল আশাবাদী। সম্ভাব্য গ্যাস মজুদ প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট। গ্রাহক পর্যায়ে এই গ্যাসের মুল্য প্রায় ৬,৭৪৪ কোটি টাকা। এলএনজি আমদানি বিবেচনায় যার মুল্য প্রায় ২৪,৭৫০ কোটি টাকা।
ইলিশায় বাপেক্স যে মজুদ খুঁজে পেয়েছে তা এর আগে ভোলা জেলায় আবিষ্কৃত দুটি গ্যাসক্ষেত্র শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থের থেকে আলাদা ভূ-কাঠামোতে অবস্থিত। যদিও ভোলা নর্থ একটি আলাদা গ্যাসক্ষেত্র কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ অনেক ভূতাত্ত্বিক মনে করেন এটি শাহবাজপুর ফিল্ডেরই একটি বর্ধিতাংশ, যা মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
তবে বাপেক্স সূত্র বলছে, শাহবাজপুর থেকে ইলিশা কমপক্ষে ৩৫ কিলোমিটার দূরে এবং এর রিজার্ভটি সিসমোজেনিক চুত্যির দ্বারা অন্য দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে আলাদা। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ফেসবুকে লিখেছেন, বাংলাদেশ একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে।
জানা যায়, ১৯৯৪-৯৫ সালে ভোলার শাহবাজপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর থেকে এখানে আরও গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ইলিশা-১ ভোলার নবম গ্যাসক্ষেত্র। একের পর এক গ্যাসের সন্ধান মেলায় নতুন করে সম্ভাবনা দেখছে ভোলাবাসী।
তারা প্রত্যাশা করছেন, নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের ফলে একদিকে যেমন জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। গৃহস্থালির কাজেও গ্যাস সংযোগের দাবিও জানান ভোলাবাসী।
২০২২ সালে বাপেক্স দুই বছরে কমপক্ষে ৪৬টি কূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছে। যার অংশ হিসেবে ভোলায় তিনটি কূপ খনন করা হয় এবং সবগুলোতেই গ্যাস পাওয়া যায়।