রিজন বড়ুয়া, রামু প্রতিনিধি:
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের রামুতে আষাঢ়ি পূর্ণিমা পালন করছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। আষাঢ়ি পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। তাই এই উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দিনটি গুরুত্ব সহকারে পালন করে থাকে।
এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১ আগস্ট ) সকালে রামুর কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, মৈত্রী বিহার, হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহার সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আষাঢ়ি পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারে সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টশীল গ্রহণ, সমবেত প্রার্থনা, চীবরদান, গুরু ভক্তি, ছোয়াইং প্রদান (ভান্তেদের খাবার দান) মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনসহ নানা অনুষ্ঠান পালন করেন। এসময় বুদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন, রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের পরিচালক কে.শ্রী জ্যোতিসেন মহাথের।
বিকালে ধর্মদেশনা, বস্ত্র বিতরণ, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন ও দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনার মধ্যদিয়ে শেষ হয় আষাঢ়ি পূর্ণিমার আয়োজন।
জানা যায়, এই তিথিতেই গৌতম বুদ্ধ মাতৃগর্ভে ধারণ, গৃহত্যাগ ও বুদ্ধত্ব লাভের পর প্রথম তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যকে ধর্মচক্র দেশনা দেন এবং সংযম পালনের ব্রত হতে এই আষাঢ়ি পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিনমাস বর্ষাবাস শুরু করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গৌতম বুদ্ধ মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি লাভ, রাজ প্রাসাদ, রাজত্ব ও স্ত্রী-পুত্রের মায়া ত্যাগ করে দুঃখ থেকে মুক্তির পথ অন্বেষণে গৃহত্যাগ ও বুদ্ধত্ব লাভের পর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের উদ্দেশে প্রথম ধর্মের বাণী প্রচার করে।
প্রসঙ্গত, এ আষাঢ়ি পূর্ণিমার পরে তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বর্ষাবাস শুরু করেন। এ সময় ভিক্ষুরা জরুরি কোনো কারণ ছাড়া বিহারের বাইরে রাত্রিযাপন করতে পারেন না। এ তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্ম বিনয় অধ্যয়ন ও ধ্যান চর্চা করে থাকেন। তিন মাস বর্ষাবাস শেষ হওয়ার পর প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপনের মধ্যদিয়ে শুরু মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব।