সাইদুল ফরহাদ :
এবার ঈদুল ফিতরে রয়েছে লম্বা ছুটি। এ ছুটিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে লাখো পর্যটক আসবে, আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের।আর পর্যটকদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস ও সাত শতাধিক রেস্তোরাঁ। এরই মধ্যে পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস ও কটেজের প্রায় ৬০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে।তাই কক্সবাজারে লেগেছে ঈদের আমেজ। ঈদের টানা ছুটিকে ঘিরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
রোজায় পর্যটকশূন্য বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। সৈকতের নোনাজল বা বালুচর যেমন ফাঁকা ঠিক তেমনি পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস ও সাত শতাধিক রেস্তোরাঁতে নেই পর্যটকের আনাগোনা। সামনে ঈদ। রয়েছে ঈদের টানা কয়েকদিনের ছুটি। পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, ঈদের টানা ছুটিতে প্রচুর পর্যটক কক্সবাজার আসবে। তাই হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলোকে সাজানো হয়েছে নতুনরূপে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তোলা হয়েছে নতুন নতুন পণ্য। এরই মধ্যে আশানুরূপ রুম বুকিং পেতে শুরু করেছে সমুদ্র পাড়ের তারকামানের হোটেলগুলো।এ জন্য হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো ধোয়া-মোছাসহ পর্যটক বরণে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল জোনের সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান,ঈদে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সাড়া দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় হোটেল-মোটেলের ৬০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে।এবারের ছুটিতে পর্যটকরা যেন হয়রানি না হয় সেজন্য টুরিস্ট পুলিশ, জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত কোন হোটেল যদি অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেলে তার সদস্য পদ বাতিল করা হবে।পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত।
তারকা মানের হোটেল স্বপ্নিল সিন্ধু রিসিপশনে থাকা শরীফ আদনান বলেন,ঈদের পরের দিন থেকে আমাদের হোটেলে প্রায় শতভাগ বুকিং আছে।এবারের ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি থাকায় বুকিং বেড়েছে। আমরা আশা করছি এবারে কক্সবাজারে ৩লাখ পর্যটক সমাগম হবে।
তারকা মানের হোটেল কক্সবাজার টুডের ম্যানেজার আবু তালেব বলেন,আমাদের হোটেলের সব রুম বুকিং হয়ে গেছে। অনেকেই অনলাইনে রুম চাইলেও দিতে পারছি না। আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি।
ট্যুর অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, এবারের ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটিতে কক্সবাজারে ৩লাখ পর্যটক সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি।পর্যটকদের বরণ করে নিতে আমাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।কক্সবাজারের প্রায় হোটেল বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকরা যেন হয়রানি না হয় সেটির লক্ষ্যে আমরা কাজ করি যাচ্ছি।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হোসেন জানান, ঈদের এক দিন আগে থেকে কক্সবাজার রুটে চাপ রয়েছে ।ঈদের পরের দিন থেকে কক্সবাজার দৈনিক ২০ টি ফ্লাইট আসবে ২০ টি যাবে।এবারের ঈদে ছুটিতে পর্যটকদের টিকিটের চাহিদা বেশি। ইতিমধ্যে আমরা ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।
কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন মাস্টার মেহেদী হাসান বলেন, পর্যটকদের জন্য স্পেশাল বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মতো স্পেশাল কমিউটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।ঈদের পরদিন থেকে টানা ১০দিন পর্যন্ত চাপ থাকবে।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের অধিনায়ক আপেল মাহমুদ বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ইন্টারকম ও ইমার্জেন্সি বাটন স্থাপন করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। যার মাধ্যমে পর্যটকরা কোনো সমস্যায় পড়লে তৎক্ষণাৎ আমাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন।এবার ঈদুল ফিতরে তিন লাখ পর্যটক আসবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের বেশির ভাগ হোটেল বুকিং শেষ হয়ে গেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। সিসিটিভি ধারা পুরো বিচ নিয়ন্ত্রণ করা হবে।