সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:
অন্য সবার মতো আজ থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার হলে যাওয়ার কথা ছিলো রিমঝিমের। প্রস্তুতিও ছিল ভালো। কিন্তু নিয়তির কারণে পরীক্ষার হলের বদলে তাকে যেতে হলো শশ্মানে। পবেশপত্র হারিয়ে ফেলায় মা বাবার বকার ভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রিমঝিম দাশগুপ্ত (২০)।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার পোস্ট অফিস গলির সর্দার ভবনে নিজেদের বাসায় আত্মহনন করেন রিমঝিম।
রিমঝিম একটি ইলেকট্রিক ক্যাবল কোম্পানীর কর্মকর্তা সদরঘাট থানার রাজিব দাশগুপ্ত রাজুর মেয়ে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে রিমঝিম বড়। তিনি নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহত রিমঝিমের প্রতিবেশীরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে রিক্সা থেকে পড়ে যান তিনি। এ সময় এইচএসসির প্রবেশ পত্রটি হারিয়ে ফেলেন তিনি। এ ঘটনায় মা বাবার বকার ভয়ে আত্মহননের মতো পথ বেঁছে নেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাত থেকে পড়তে বসেন রিমঝিম। কিন্তু রাত দেড়টা পর্যন্ত পড়ার রুম থেকে বের না হওয়ায় তাকে ডাকতে গেলে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান রিমঝিমের পরিবারের সদস্যরা।
মৃত্যুর সময় একটি চিরকুট লিখে যান রিমঝিম। চিরকুটে লিখেন, ‘মা ও বাবা, তোমরা অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছো, কিন্তু আমি তোমাদের সন্মান রাখতে পারিনি, আমাকে তোমরা ক্ষমা করে দিও।’
রিমঝিমের মৃত্যুর পর সদরঘাট থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক আকতার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করি। ধারণা করা হচ্ছে দিবাগত রাত ৩ টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালে প্রেরণ করি।’
পরিবারসূত্রে জানা যায়, গতকাল ছিলো রিমঝিমের জন্মদিন। মেয়েকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ১৯ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে শুভেচ্ছা বার্তা লিখে পোস্ট করেন বাবা রাজিব।
এদিকে রিমঝিমের মৃত্যুতে সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। শোকের হাওয়া বইছে সদরঘাট এলাকাতেও।
রিমঝিমের প্রতিবেশি কমল দাশ বলেন, ‘খুব সাধারণ জীবন ছিল তাদের। এলাকার সবার সাথেও ছিল সুসম্পর্ক। ভাল ছাত্রী হিসেবে এলাকায় ভাল নামডাকও ছিলো রিমঝিমের।’