শনিবার, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫

বহুল আলোচিত ইয়াবা গডফাদার রবিউল আলম অবশেষে র‍্যাবের জালে

নিজস্ব প্রতিবেদক :

হত্যা, নারী অপহরণ, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন, ইয়াবা পাচার, মানি লন্ডারিং, সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা; কী অপরাধ নেই তার ঝুলিতে! অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে বেশ কিছু মামলার আসামি হয়েও আধুনিক ভার্সনের আর ওয়ানফাইভ (আর-১৫) ব্রান্ডের মোটরসাইকেল নিয়ে দিব্যি দাপিয়ে বেড়ান তিনি। দীর্ঘদিন আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অপরাধ সাম্রাজ্য চালিয়ে নিতে সক্ষম হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। র‍্যাবের জালে আটকে শ্রীঘরে গেছেন কক্সবাজারের টেকনাফের নাজিরপাড়ার এলাকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যাবসায়ী সিদ্দিক আহম্মদ ওরফে ব্ল্যাকার সিদ্দিকের দ্বিতীয় পুত্র ইয়াবা রবিউল দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে ‘ইয়াবা কারবারির’ করে আসছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কোটিপতি শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত রবিউল আলম ওরফে রইব্যা।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) গ্রেপ্তার হয়ে শনিবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। গ্রেপ্তার রবিউল আলম (২৮) টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরপাড়ার সিদ্দিক আহমেদের ছেলে। বর্তমানে তারা সপরিবার কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলী ডিসি পাহাড় এলাকায় বাস করেন।
র‍্যাব সূত্র জানায়, ১৪ এপ্রিল রাতে র‍্যাব ১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের এক চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার পৌর শহরের কলাতলি ডিসি পাহাড় এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অসংখ্য মামলার এজাহারভুক্ত ও কর্ণফুলী থানার একটি মাদক মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি সুচতুর রবিউল বাসার পেছন দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পলায়নরত অবস্থায় র‍্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত রবিউল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একজন শিক্ষার্থী হয়েও তার ব্যাংক একাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রবিউলরা টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরপাড়ার গ্রামের বাড়ি ছেড়ে বছরখানেক পূর্বে সপরিবার কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলী ডিসি পাহাড় এলাকায় বসবাস শুরু করেন। রবিউল, তার বড় ভাই ফরিদুল আলম এবং তার বাবা সিদ্দিক আহমেদ প্রত্যেকেই ক্রমিক অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এবং ১০/১৫টি মামলার এজাহারভূক্ত আসামি। রবিউলের বিরুদ্ধে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ২টি হত্যা, ২টি অস্ত্র আইনের মামলাসহ নারী অপহরণ, মানি লন্ডারিং, ইয়াবা পাচারের অসংখ্য মামলা রয়েছে।

র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, রবিউলের মামলাগুলোর তথ্য পাওয়ার পর তার বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। প্রায় সময় স্থান পরিবর্তন করার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা রবিউলকে আটক করতে সক্ষম হই। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য গ্রেপ্তারকৃত রবিউলকে কক্সবাজার সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ইয়াবা রবিউল দীর্ঘদিন যাবৎ কখনো ছাত্র পরিচয়,আবার কখনো আইনজীবী পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্পষ্টে মরণব্যাধি ইয়াবা পাচার করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে।

কথিত নামধারী রবিউলের অনুসন্ধানে জানা যায়,সে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে দামি দামী গাড়িতে সরকারি স্টিকার লাগিয়ে ইয়াবার বড় চালান পাচার কালে ঢাকা শিল্পাঞ্চল থানায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়ে প্রাই পাঁচ মাস জেল কেটে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জামিনে বেড়িয়ে এসে আবারো ইয়াবা কারবার দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের মাধ্যমে রবিউলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজন মতো তার মামলাগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর

error: Content is protected !!