মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৫, ২০২৪

বিমানবন্দরে জব্দ ৬৪ বোতল মাদক, সাময়িক বরখাস্ত পাঁচ ফুটবলার

সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:

এএফসি কাপ ফুটবলে গ্রুপ পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে মালদ্বীপে গিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের মালেতে মাজিয়া স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে খেলে ৩-১ গোলে হেরেছিল বসুন্ধরা কিংস। ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে কাস্টমসের হাতে ধরা পড়েন পাঁচ ফুটবলার। তাদের ব্যাগ থেকে বের করে আনা হয় মদের বোতল। কাস্টমস বিভাগ ফুটবলারদের ব্যাগ থেকে ৬৪ বোতল মদ জব্দ করেছে।

অভিযুক্ত পাঁচ ফুটবলারকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে তাদের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস। যারা অভিযুক্ত হয়েছেন, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এই পাঁচ ফুটবলারকে ছাড়াই নিজেদের মাঠ কিংস অ্যারেনায় প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতের লিগ চ্যাম্পিয়ন ওড়িষা এফসিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে কিংস।

ক্লাবের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ওরা জাতীয় দলের খেলোয়াড়, আমরা অধিকতর তদন্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আমাদের ক্লাব থেকেই তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পাঁচজনকেই ক্যাম্প থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে অভিযুক্ত ফুটবলারদের ডাকা হতে পারে।’

বিদেশের মাঠে খেলতে গিয়ে ফুটবলাররা মদ নিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়তে পারেন—এটা ক্লাব কর্তৃপক্ষ চিন্তাও করতে পারে না। অভিযোগ এতই গুরুতর যে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অভিযুক্ত ফুটবলারদের ক্যাম্প থেকে বের করে দিয়েছে।

আর এরা হলেন জাতীয় দলের সিনিয়র ফুটবলার রক্ষণভাগের তপু বর্মণ, গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো, আক্রমণভাগের শেখ মোরসালিন,রিমন ও সবুজ।

এই পাঁচ ফুটবলার মদের বড় চালান নিয়ে এসেছিলেন বলে জানা যায়। তাদের কাছে ছিল শতাধিক মদের বোতল।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যখন সন্দেহ করে, তখন ফুটবলাররা মদ সরিয়ে নিতে গিয়ে বোতলের ছিপি খুলে টয়লেটে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান দলের সঙ্গে থাকা অন্য এক ফুটবলার। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পাঁচ ফুটবলারকে আলাদা করে একটি রুমে গিয়ে তল্লাশি করলে তারা ৬৪ বোতলের সন্ধান পান।

সব কটি মদের বোতল জব্দ করেন। শুধু জাতীয় দলের খেলোয়াড় পরিচয় দেওয়ার কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাত্ক্ষণিকভাবে তাদের ছেড়ে দেয়।

সফরসঙ্গী হিসেবে ক্লাব কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সেরে যখন বাইরে তপু, জিকো, মোরসালিন, রিমন, সবুজদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন তারা ভেতরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জেরার মুখে।

তারা যে শতাধিক মদের বোতল নিয়ে এসেছেন মালদ্বীপ বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপ থেকে, সেটা জানাই ছিল না কর্মকর্তাদের।

ক্লাব কর্মকর্তারা বলছেন, ‘এত মদের বোতল কেউ আনে? ওরা কি ব্যবসা করবে নাকি যে এত মদ কিনেছে!’

কিংসের অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আগেই যদি বলত একটা ঘটনা হয়ে গেছে। তখন হয়তো বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত। কিন্তু ফুটবলাররা এত চালাক যে নিজেরা ধরে নিয়েছেন ১০০ মদের বোতল বড় কোনো ব্যাপার না।’

এমন সময় ফুটবলাররা মদ নিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন, যখন বসুন্ধরা কিংসের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। একাদশের ফুটবলার আছেন অভিযুক্তদের তালিকায়। কিংস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন রাখতে পারত। কিংবা জানাজানি হলেও খেলোয়াড়দের ক্লাবের খেলায় নামিয়ে দিতে পারত। কিন্তু তা না করে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্লাব। দলের স্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করেছে, দেশের ফুটবলের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে দূরে সরিয়ে দিয়েছে মদ বহন করে ধরা পড়া অভিযুক্ত পাঁচ ফুটবলারকে।

ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা ভেবে, শৃঙ্খলার কথা ভেবে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর

error: Content is protected !!