বার্তা পরিবেশক :
কক্সবাজার বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাতের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবি করে বিয়ামের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতিষ্ঠানের ২৯ জন শিক্ষক।
তাদের দাবি অধ্যক্ষ স্থানিয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এতদিন উক্ত প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব সম্পত্তির মতো করে এসেছেন। বিয়াম মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগকারী শিক্ষকের মধ্যে অন্যতম হলেন আবুল হাসনাত জিকু, আমির হোসাইন, মো: আমিনুল ইসলাম, ইকবাল হোসাইন, সাইফুল, ইসলাম তুষার, জেসমিন আক্তার, খালিছা মোশাররফা, সায়মা আকতার, ফাতেমা নাজনীন, আরিফা পারভীন, শিখা চক্রবর্তী ।
উক্ত শিক্ষকগণ উল্লেখ করেন- প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, দুর্ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অধ্যক্ষকে পদত্যাগের জন্য আন্দোলন স্থগিত করার জন্যে গভর্নিং বডি ২৫ আগস্ট অধ্যক্ষ ইয়াছিন আরাফাতকে ১ মাসের ছুটিতে যেতে বাধ্য করেন এবং অন্তর্বতীকালীন সময়ে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেন।
বিগত ২৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭ টায় অধ্যক্ষ কর্তৃপক্ষের আদেশ ভঙ্গ করে বহিরাগত লোকের সাহায্যে বল প্রয়োগ করে বিদ্যালয় দখলে নিতে চেষ্টা করেন এবং উপস্থিত শিক্ষকদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গালিগালাজ করেন। এতে করে বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করে।
কিন্তু কর্তৃপক্ষ পূর্বের আদেশ বহাল রাখায় ইয়াছিন আরাফাত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছাড়তে বাধ্য হন। অধ্যক্ষ কাজে যোগদানের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানজুড়ে নানা অনিয়ম,অসদাচরণ, প্রশ্নফাসের মত সকল দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রীতি ও নানা অপকর্ম শুরু করেন। এ সকল বিষয়ে ইতিপূর্বে অনেক অভিযোগ প্রদানের পরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গৃহীত না হওয়ায় আজ তা চরম আকার ধারণ করেছে।
শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সকলের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার অন্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের অধ্যক্ষ তাঁর বাসার প্রাইভেট পড়তে যেতে প্রলোভিত করেন, যেতে না চাইলে অনেক শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং প্রাইভেটে থেকে চলে আসতে চাইলে বেদম প্রহার করেন বলেও দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে।
তিনি ২০২৩ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় তার কাছে প্রাইভেট পড়ুয়া সপ্তম শ্রেণী বাংলা ভার্সন ছাত্র-ছাত্রীদের গণিত প্রশ্ন পরীক্ষার আগে সরবরাহ করেছেন যা জানাজানি হওয়াতে রোল এক থেকে সাত পর্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয় পরিবর্তনে বাধ্য হয়।
যদিও প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট বা কোচিং পড়ানো নিয়ম বহির্ভুত। অধ্যক্ষ নিজ হাতে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে শিক্ষকদের নিকট হতে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে অর্থ আত্মসাৎ করেন। যার কারণে প্রতিষ্ঠানের কোন দৃশ্যমান কাঠামোগত পরিবর্তন সম্ভব হয়নি।
স্কুল ছুটির পর শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয় ত্যাগ করার পূর্ব মূহুর্তে বিনা নোটিশে অপ্রয়োজনীয় মিটিং কল করে থাকেন। উক্ত মিটিং সমূহে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক আলোচনার চেয়েও অগুরুত্বপূর্ণ, অপ্রাসঙ্গিক ও অসংলগ্ন নানা শ্রুতিকটু কথাবার্তা বলে থাকেন। নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক গাল- গল্প মিশ্রিত এজেন্ডাবিহীন ওয়ানওয়ে সভাগুলো মূলত নিজের কর্তৃত্ব জাহির করার উদ্দেশ্যে যে করা হয়, তা সহজে অনুমেয়।
বর্ণিত সভা সমূহে সকলের উপস্থিত উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণের পদ-পদবী উল্লেখ করে তাচ্ছিল্যতার সাথে অপমানজনক নানা কটূক্তি করে অসম্মানজনক আচরণ করে থাকেন।