সোমবার, অক্টোবর ২, ২০২৩

মণিপুরে ঢুকেছে মিয়ানমারের ৭১৮ নাগরিক, ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার

সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:

সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের ৭১৮ জনের বেশি নাগরিক কীভাবে তাদের রাজ্যে ঢুকতে পারল, তা জানতে চেয়েছে ভারতের মণিপুর রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার বলছে, মিয়ানমারের এসব নাগরিক ঢুকেছে গত শনি থেকে রোববারের মধ্যে। এই ৭১৮ জনের মধ্যে ৩০১ জন শিশু ছিল। রাজ্য সরকার বলছে, তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তবু তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।

মণিপুরের মুখ্য সচিব বিনীত যোশী আসাম রাইফেলসকে গতকাল সোমবার একটি চিঠি দেন। সেখানে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আসাম রাইফেলসকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে। মিয়ানমার থেকে সে দেশের কোনো নাগরিক যাতে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বৈধ ভিসা বা ভ্রমণের কাগজপত্র ছাড়া ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে জানানো হয়েছে।

আসাম রাইফেলসের সেক্টর-২৮–এর প্রধান কার্যালয় জানিয়েছে, মিয়ানমারের সাগাইন অঞ্চলের খামপাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৭১৮ জন নতুন শরণার্থী রাজ্যে ঢুকেছে। তারা মণিপুর রাজ্যের চান্দাল জেলা হয়ে ঢুকেছে। আসাম রাইফেলস দাবি করেছে, খামপাতে সহিংসতার কারণেই এই লোকগুলো মণিপুরে ঢুকেছে।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২২ ও ২৩ জুলাই ২ দিনে মোট ৭১৮ জন মিয়ানমারের নাগরিককে উপযুক্ত কাগজপত্র ছাড়াই মণিপুরে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আসাম রাইফেলসের কাছে জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার।
বিনীত যোশী বলেন, রাজ্য সরকার আসাম রাইফেলসের কাছে পূর্ণ প্রতিবেদন চেয়েছে।

কীভাবে এবং কেন ৭১৮ জন মিয়ানমারের নাগরিক চান্দাল জেলা হয়ে কোনো বৈধ কাগজ ছাড়াই মণিপুরে ঢুকতে পারল, তা জানতে চায় সরকার। সরকার এসব নাগরিককে ফেরত পাঠানোর জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।

যোশী আরও বলেন, চান্দাল জেলার প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও সরকারের নির্দেশ বাস্তবায়নের বিষয়টি দেখভাল করার জন্য বলা হয়েছে। যেসব ব্যক্তি মণিপুরে ঢুকে পড়েছিল, তাদের ছবি ও আঙুলের ছাপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

কয়েক দিন আগেই মণিপুর সহিংসতার একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিওতে দুই তরুণীকে বিবস্ত্র করে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায় একদল উত্তেজিত জনতাকে। এরপরই জাতিগত দাঙ্গা নতুন করে দেখা দেয় এ রাজ্যে।

চলতি বছরের ৩ মে থেকে মণিপুরে শুরু হয়েছে জাতিগত দাঙ্গা। সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই জাতিগোষ্ঠীকে তফসিলি সম্প্রদায় ঘোষণার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে কুকি সম্প্রদায়। পরে সেই আন্দোলন রূপ নেয় জাতিগত সহিংসতায়। সেই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চার শতাধিক।

মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়। মোট জনগোষ্ঠীর ৫৩ শতাংশই মেইতেই। তারা বেশির ভাগই ইম্ফল উপত্যকায় বাস করে। অন্যদিকে রাজ্যের ৪০ শতাংশ নাগরিক নাগা ও কুকি সম্প্রদায়ের। তারা মূলত পাহাড়ি এলাকায় বাস করে।

সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর