সাইদুল ফরহাদ:
বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’। এরই মধ্যে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশ আজ রাত ৯টা নাগাদ উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।
বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় হামুন পর্যবেক্ষণে কক্সবাজারে নিয়ন্ত্রণ খোলার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫৭৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবেলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নাম্বার হলো ০১৮৭২৬১৫১৩২। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলার ৯ উপজেলা ১৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান ৫ লক্ষ ৫ হাজার ৯৯০ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন জেলার ৫৭৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জেলা ১১ লক্ষ ২৫ হাজার নগদ টাকা, ৬৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৭০০ বান্ডিল ঢেউটিন মজুদ আছে বলে তিনি জানান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়টি এগিয়ে আসায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তবে পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।