সিসিএন অনলাইন ডেস্কঃ
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইস্যু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প পর্যালোচনার প্রতিবেদন দ্রুত সময়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) পরিদর্শনে গিয়ে পর্যালোচনা কমিটিকে এ নির্দেশনা দেন শিক্ষামন্ত্রী।
জানা গেছে, নতুন কারিকুলামের মূল্যায়ন ও নৈপুণ্য অ্যাপের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বৃহস্পতিবার এনটিসিটিবিতে যান শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি আলোচিত ইস্যু শরীফ থেকে শরীফা হওয়ার গল্পের পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়কসহ অন্যান্য সদস্যের ডাকেন। কমিটির কাজের ধরন ও কতদিন সময় লাগবে তা জানতে চান। এ সময় কমিটির আহ্বায়ক ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুর রশীদ মন্ত্রীকে জানান, নির্ধারিত সময় বেঁধে দেবেন না। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করব।
জানতে চাইলে এনটিসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় বেঁধে দিতে চান। কিন্তু কমিটির প্রধান জানান— বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর তাই পর্যালোচনা কমিটিতে ইসলামি ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তারা কোরআন হাদিস ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের রেফারেন্স হিসেবে সহায়তা নেবেন। তাই নির্ধারিত সময় বেঁধে না দেওয়ার অনুরোধ জানান। মন্ত্রী তখন দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
ফরহাদুল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন। মন্ত্রণালয় থেকে যদি বলা হয়— চ্যাপ্টার বাতিল করতে হবে তাই করব। আর যদি বলে সংশোধন করতে, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করব।
পর্যালোচনা কমিটির প্রধান অধ্যাপক আবদুর রশীদ বলেন, এই ইস্যুটি খুবই স্পর্শকাতর। এটা নিয়ে আমরা তাড়াহুড়া করতে চাই না। সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের যে অংশ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোনো কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন মনে হলে সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে। এরপর মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
গল্পের পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আনুষ্ঠানিক এখনও বসা হয়নি। কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে বসে কতটুকু পরিবর্তন হবে কিংবা কী ধরনের পরিবর্তন হবে, সে বিষয়ে আলোচনা করব। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সবার পরামর্শের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইস্যু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের বইয়ের পাতা ছিড়ে চাকরি হারান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহতাব। এরপর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) আন্দোলনে নামেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য গতকাল বুধবার উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুর রশীদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ। এ কমিটি আজ বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বসেন।