সিসিএন অনলাইন ডেস্কঃ
‘একটি ছাগল, সারা জীবনের কান্না’-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চোখ রাখলেই সামনে আসে এমন পোস্ট। এবার ঈদুল আজহায় সবচেয়ে ভাইরাল পশু ‘সাদিক এগ্রো’র একটি ছাগল। তবে এর নেপথ্যে ছিলেন এক তরুণ। ইফাত নামের ওই তরুণ ১৫ লাখ টাকায় ওই এগ্রো থেকে ছাগল ক্রয় করেছেন, বলে ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। নেটিজেনদের দাবি, ইফাত নামের ওই তরুণের পুরো নাম মুশফিকুর রহমান ইফাত। তিনি রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। তবে গতকাল বুধবার মতিউর রহমান নামের ওই রাজস্ব কর্মকর্তা ইফাতকে তার ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন।
নুসরাত জাহান নিশা নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কী এক জামানা এলো, একটি ভুলে বাবা তার সন্তানকে অস্বীকার করে। সম্পর্ক বদলে গেল একটি ভুলে।’
গতকাল মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল ওই ছেলেকে আমি চিনি না।
সে আমার সন্তান নয়। আমার নাম জড়ানোয় আমি ও আমার পরিবার অনেক বিব্রত।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওই ছেলে আমার আত্মীয় বা পরিচিতও নয়। আমার এক ছেলে; নাম তৌফিকুর রহমান। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অপ্রচারের প্রতিবাদ করব।
তার দাবি, নিশ্চয়ই এই ঘটনার পেছনে কারো দুরভিসন্ধি আছে। এ বিষয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ নিবেন।
তবে নেটিজেনদের প্রশ্ন, তাহলে কে এই ইফাত? কেনই বা সে নিজের বাবার পরিচয় দিতে গিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি মতিউর রহমানের নাম নিল?
এদিকে ফেসবুকে ইফাতের বলা ঠিকানায় গিয়ে তাকে পাননি গণ্যমাধ্যমকর্মীরা। মুঠোফোনে ইফাত নামের ওই যুবক দাবি করেন, সাদিক এগ্রোর মালিকের কথামতো ছাগল কেনার অভিনয় করেছেন তিনি।
ইফাতের ভাষ্য, সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান তার খুব কাছের একজন ভাই। তিনি তাকে বলেন, ‘খাসিটাকে একটা থাপ্পর দাও, তাহলে দেখ সে কি করে।’ তার কথামতোই কাজটি করেছেন ইফাত এবং তারপর ছবি ও ভিডিও করেছেন।
এই ছাগলকাণ্ডে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো প্রশ্ন নয়। এটা নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব দেব না।’
তবে ইফাত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে বলে জানিয়েছেন করছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। তিনি দেশের একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইফাত তার মামাতো বোনের সন্তান। আর মতিউর রহমানই তার বাবা।
নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, ‘ইফাত এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে। ধারণা করছি, রাগ করে মতিউর রহমান ইফাতের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন। মতিউর রহমান নিয়মিত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর নানা পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।’
মতিউর রহমান ইফাতকে অস্বীকার করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের দুজনের এক সঙ্গে একাধিক ছবি ভাইরাল। একই সঙ্গে দেখা যায় পরিবারের অন্য সদস্যদেরও।