সোমবার, মে ২০, ২০২৪

বাংলাদেশে টেকসই পর্যটনের জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশের দায়িত্বের উপর- দলগত আলোচনা শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথি মোঃ আবুল কালাম ছিদ্দিক

সিসিএন অনলাইন ডেস্ক:

কক্সবাজার রিজিয়ন ট্যুরিষ্ট পুলিশের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে টেকসই পর্যটনের জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশের দায়িত্বের উপর’-দলগত আলোচনা শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (১০ মার্চ) বিকেলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সম্মেলন কক্ষে ট্যুরিষ্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি বিধান ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ট্যুরিষ্ট পুলিশের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক।

এ-সময় প্রধান অতিথি বলেন ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটক ও পর্যটন শিল্পের সামগ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা হিসাবে ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে দেশে ট্যুরিস্ট পুলিশ তার কার্যক্রম শুরু করে। নিঃসন্দেহে বিষয়টি সময়োপযোগি। তবে গত এক যুগ ধরে ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিধিকে আমরা পর্যটন শিল্পের নিরাপত্তা ও বিকাশে কতটুকু সমৃদ্ধ করতে পেরেছি সেই চিন্তা কি কখনো করে দেখেছি?

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ২৩ লাখের অধিক লোক জড়িত। প্রতি বছর আবার লক্ষ লক্ষ ভ্রমণপ্রেমী মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটন স্থানে ভ্রমণ করে থাকে। ভ্রমণপিপাসু দেশি-বিদেশি পর্যটকের জান-মাল ও সম্মানের নিরাপত্তা এবং পর্যটকদের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্তের বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষ শাখা হিসেবে ট্যুরিস্ট পুলিশ বা পর্যটন পুলিশের অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানসম্মত ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু শুধু শুধু সৃষ্টিতেই সন্তুষ্টি থাকলে হবে না বরং ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিধিকে বিস্তৃত করতে হবে অনেক দূরে।

এ-সময় তিনি আরও বলেন পর্যটকদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, ভ্রমণ অনুকুল পরিবেশ নিশ্চিত করা, পর্যটকদের আইনগত সহায়তা প্রদান, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা-এমন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশ দেশ ও জাতির সেবায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এ কথা সত্যি যে, পর্যটন মৌসুমে ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রয়োজনীয়তা সমধিক। মৌসুম ব্যতিত ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যাবলী অর্ধেক কমে যাওয়া স্বাভাবিক। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে বদলীর ব্যবস্থা প্রচলন থাকায় পর্যটন মৌসুমে পরিধি বিস্তৃতির বিবেচনায় ট্যুরিস্ট পুলিশে অভিজ্ঞ, দক্ষ ও মানবসেবায় ব্রত আছে এমন সদস্যকে বদলী করে ইউনিটের কলেবর বৃদ্ধি করা জরুরি। ২০১৭ সালে মোবাইল অ্যাপ ‘হ্যালো ট্যুরিস্ট’ চালু করেছে, যার মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ট্যুরিস্ট পুলিশে হেলিকপ্টার ব্যবস্থা থাকা উচিত। দিনের মত রাতের পর্যটন স্থানও নিরাপদ রাখা জরুরি।
ইতিমধ্যে কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। সাগরপাড়ে ঘুরতে আসা ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তায় ২০ টা সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছি এবং সেন্ট্রাললি সেগুলো মনিটরিং করা হচ্ছে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মোঃ আনিসুর রহমান।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়ন পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মোঃ আপেল মাহমুদ।
স্বাগত বক্তব্যে পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ বলেন, এই বীচ কে আমরা সকল ধরনের অপরাধ মুক্ত করতে চাই। অপরাধ মুক্ত করতে গিয়ে আমরা অসংখ্য সিন্ডিকেটের তথ্য পেয়ছি। অভিযান পরিচালনা যাতে সফল না হয় সেজন্য সিন্ডিকেটের লোকজন বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতেছে।
কোন ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন এই শহর কে নিরাপদ ও পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তুলতে আমরা নিয়োজিত রয়েছি। সকল অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আমরা বদ্ধপরিকর।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারস পুলিশ সুপার সরদার নূরুল আমিন,
কক্সবাজার সিআইডি পুলিশ সুপার শাহেদ মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক বিভাগ) জসিম উদ্দিন চৌধুরী

এতে আরও বক্তব্য রাখেন হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম, সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, কক্সবাজার ট্যুরিসজম এসোসিয়েশন (টোয়াক) সাধারণ সম্পাদক, নুরুল কবির পাশা, কক্সবাজার হোটেল অনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, পর্যটন বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ দুলাল, মেরিন ড্রাইভ হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মোকিম খান, কিটকিট চেয়ার মালিক সমিতির সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, ড্রাগন মার্কেটের সভাপতি আবছার, বীচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান সহ আরও অনেকে।

এছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের কর্তব্যরত কর্মকর্তা, পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ খবর