বিশেষ প্রতিনিধি :
কক্সবাজার থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৪৩৮ ফ্লাইটটি ছিলো সোমবার বিকেল ৫.১০ মিনিটে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঢাকা থেকে ফ্লাইটটি সঠিক সময়ে পৌঁছতে না পারায় যাত্রীদের আশ্বাস দিয়ে অপেক্ষায় রাখা হয় কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
এরপর বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয় ৭.২০ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে পৌঁছবে কক্সবাজারে। সেই সময়ও না আসায় আবার আশ্বাস দেওয়া হয় ৮.০৫ মিনিটে আসার। পরে বলা হয় ৮.৫০ মিনিটে আসবে ফ্লাইটটি। কিন্তু সেই সময়ও আসেনি।
পরে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এরপর রাত ১০ টার দিকে যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে গেলে তখনও স্পষ্ট জবাব দেয়নি বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ। পরে রাত ১১ টার দিকে জানানো হয় ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী যাত্রী তারেক নুর এভাবেই হয়রানি ও ভোগান্তির বর্ণনা দেন সিসিএনের কাছে। তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকার বিকেল ৫.১০ মিনিটের বিজি ৪৩৮ নম্বর ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন।
তারেক নুর জানান, ওই ফ্লাইটে ৯০ জন যাত্রী ছিলেন। সেখানে ৪ জন ছিলেন আন্তর্জাতিক যাত্রী। তাদের সোমবার রাত ১১.৩০ মিনিটে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদিগামী ফ্লাইটে উঠার কথা ছিলো। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানের অবহেলার কারণে তারা ফ্লাইট ধরতে পারেনি।
তিনি জানান, বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট বাতিলের বিষয়টি সন্ধ্যার দিকে জানিয়ে দিলেও বিকল্প ব্যবস্থায় যাত্রীরা ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করতে পারতো। কিন্তু রাত ১১ টায় জানানোর কারণে সেটিও করতে পারেনি তারা। যাত্রীদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু ছিলো।
এই হয়রানি ও ভোগান্তির বিচার চেয়ে তারেক নুর দাবী করেন ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় তার মতো অনেকেই বাসে ঢাকায় যাচ্ছেন।
কক্সবাজারে ট্রাভেল এজেন্সি নিউ বি-সেইফ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশ বিমান যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করেছে। তাদের অবহেলার কারণে আন্তর্জাতিক যাত্রীরাও হয়রানি এবং লোকসানের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের এই ধরণের আচরণের কারণে যাত্রীদের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাদের।
দেলোয়ার দাবী করেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে প্রতিটি বিমানের ফ্লাইট কয়েক ঘণ্টা দেরি হয়। কিন্তু তারপরও বেসরকারি বিমানগুলো ফ্লাইট পাঠিয়ে রাতে তাদের সকল যাত্রী ঢাকায় নিয়ে গেছে। সেখানে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে দিয়ে যাত্রীদের সাথে প্রতারণা করেছে।
বাংলাদেশ বিমানের কক্সবাজার অফিসের কর্মকর্তা তারেক জানান, আবহাওয়া খারাপ ছিলো, সেকারণে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসলেও পরে ফ্লাইটটি ঢাকায় ফেরত যায়।
তারেক বলেন, বিমানবন্দর থেকে বার বার ক্লিয়ারেন্স চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ফ্লাইটটি কক্সবাজার আসতে পারেনি।
প্রাইভেট বিমানগুলোর ফ্লাইট আসলেও বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট কেনো আসতে পারেনি এমন প্রশ্নে তারেক জানান, ‘আমরা শতভাগ নিরাপত্তা মেনে চলি। সেকারণে ফ্লাইটটি আসতে পারেনি। কারণ কক্সবাজারের আবহাওয়া পরিস্থিতি খুবই খারাপ।’
বাংলাদেশ বিমানের কক্সবাজারের ইনচার্জ দেব দুলাল বলেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সাড়ে ৩ টায় রওনা দিলেও আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজারে আসতে না পেরে ভারত ঘুরে আবারও ঢাকায় চলে গেছে।
তিনি বলেন, এরপরও অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছিলো কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আসতে পারেনি।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে যেতে না পারা যাত্রীদের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় কি সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।